এমন কী এই গাড়ির সাথে যদি একখানা Lamborghini ফ্রি দিয়ে বলা হয়, গাড়িখানা আপনার বাড়িতে সাজিয়ে রাখুন, তারপরও মনে হয়, নিতে চাইবেন না !! যদি আপনি এর ইতিহাস জানেন। এক ভয়ংকর ইতিহাস .
১৯১৪ সাল।
অস্ট্রিয়ার Archduke (যুবরাজ) Franz Ferdinand দাওয়াত খেতে গেলেন সার্বিয়ার রাজধানী সারিয়েভো’তে। প্রথমবারের মত এই গাড়িতে উঠলেন প্রিয়তমা স্ত্রীকে নিয়ে।
গাড়িটি চলতে লাগলো। রাস্তায় দাঁড়ানো আততায়ীর গুলিতে মারা গেলেন দু’জন। অতঃপর, এই খুনের প্রতিশোধ নিতে অস্ট্রিয়া যুদ্ধ ঘোষণা করল সার্বিয়ার বিরুদ্ধে। অস্ট্রিয়ার পক্ষে দাঁড়ালো কাইজারের জার্মানি, আর সার্বিয়ার পক্ষে দাঁড়ালো রাশিয়া। একসময় যুদ্ধে জড়িয়ে গেলো সারা দুনিয়া। হয়ে গেল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। যা ছিলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকেও অনেক বেশি বিধ্বংসী ও প্রানঘাতী।
১৯১৫ সালে গাড়িটি প্রদান করা হল ব্রিটিশ সেনাদলের ক্যাপ্টেন’কে। তিনি এটি ব্যবহার করতে পেরেছিলেন মাত্র ৯ দিন । ১০ দিনের মাথায় দুজন যাত্রী সহ মৃত্যু হয় তার।
এরপর ১৯১৮ সালে যুগোস্লাভিয়ার গভর্নর অস্ট্রিয়া সফরে আসেন। বিখ্যাত গাড়িখানা কিনে তার সংগ্রহে রাখেন। ১৯১৯ সালে ব্রেকফেল করে তিনি মারা যান । যদিও গাড়িখানার খুবই সামান্য ক্ষতি হয়। এরপর সারকিন্স নামের এক ডাক্তার গাড়িখানা কিনে নেন। তিন দিনের মাথায় রাস্তার ধারের খালে পড়ে পানিতে ডুবে তিনি মারা যান।
এবারও গাড়িটি অক্ষত থাকে।
এভাবে আরো ৫ জনের হাত বদল হয়। আজব ব্যাপার হল, সবাই মারা যান। এত দুর্নাম থাকার পরও জার্মানির এক সৌখীন সংগ্রাহক গাড়িটি কিনে নেন। এবং পরের দিনই বিক্রি করে দেন এক মেকানিক্সের কাছে। তিনি গাড়িটা একটু মেরামত করে বিক্রি করে দেন সারিয়েভোর এক ধনী কৃষকের কাছে। ২৫ বছর পর গাড়িটি ফিরে আসে নিজ দেশে। কিন্তু অপয়া গাড়ি বলে কথা !! সারিয়েভো সহরে যেদিন গাড়িটি আবার প্রবেশ করে,
কাকতালীয় বলেন আর ভুতুড়ে বলেন, সেদিনই শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
সবাই ধরে নিলো, এই গাড়ির কারনেই আবার যুদ্ধ শুরু হয়েছে। শহরের সবার প্রতিবাদের মুখে জেলা প্রশাসক ওই কৃষক’কে আদেশ দিলেন, হয় দেশ ছেঁড়ে চলে যেতে, না হয় গাড়িটি ধ্বংস করে ফেলতে। কৃষক প্রথম শর্তটি বেছে নিলেন। শহর ত্যাগ করে অন্য শহরে যাবার সময় রাস্তার মাঝে গাড়িখানা বিগড়ে গেল। নিরুপায় হয়ে দু’খানা বলদ গাড়ির সঙ্গে জুড়ে দিলেন। আর কৃষক বসলেন বনেটের ওপর। গরুর গাড়ি স্টাইলে কিছুদূর এগোতেই হঠ্যাৎ গাড়িটি স্টার্ট নিলো। মুহূর্তেই বলদ দু’টোকে ধাক্কা দিয়ে বনেটের উপর বসা মানুষটিকে পিষে দিলো।
এরপর ১৯৩৯ সালে গাড়িটি কিনে নেন হস ফল্টি নামের এক মেকানিক্স। ৫ দিনের মাথায় এক বন্ধুর বাড়িতে যাবার সময় ৬ বন্ধু সহ accident করে তিনি মারা যান।
বিখ্যাত গাড়িটিকে অস্ট্রিয়া সরকার ১৯৩৯ সালে কিনে মিউজিয়ামে রাখে। ১৯৪৫ সালে বোমা পড়ে মিউজিয়ামটি ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু গাড়িটি হালকা ক্ষতিগ্রস্থ হয় ।
ভিয়েনার মিলিটারি মিউজিয়ামে গাড়িটি রাখা আছে। কেউ ভিয়েনা গেলে গাড়িটি দেখে আসতে পারেন, তবে কোনো ক্ষতি হলে কিন্তু আমি দায়ী নই
যাই হোক, পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
*Credit: ইন্টারনেট ও ফেসবুক থেকে সংগৃহীত ও কপিকৃত।